
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুন্সিগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী বাজারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে চলছে অভিনব কায়দা। কাজ শুরু হলে প্রথমে সরাসরি অথবা নোটিশের মাধ্যমে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। তারপর শুরু হয় দরকষাকষি। দুপক্ষের সমঝোতা হলে নির্মাণ হয় অবৈধ স্থাপনা। মুন্সীগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী ভ‚মি অফিসের অধীনস্থ দুটি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে এমন খবর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে জানানোর পরে তিনি মুন্সিগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী ভ‚মি অফিসের কর্মকর্তা আইনুল হক ও মোঃ কামাল হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠান।
মুন্সিগঞ্জ ভ‚মি অফিসের কর্মকর্তা আইনুল হক ঘটনাস্থলে এসে অবৈধ স্থাপনা নির্মাতা শাহজাহানের সাথে কথা বলতে দেখা যায়। তিনি সামনে থাকতে থাকতেই সদ্য নির্মিত ঘর তিনটির সামনে থেকে লুকিয়ে কাজ করার জন্য যে টিনের বেড়া দেয়া হয়েছিল সেটি সরিয়ে দেন। ভ‚মি কর্মকর্তা নিজেই অবৈধ স্থাপনার উদ্বোধন করলেন এমনটাই মনে করছেন আশপাশে থাকা দোকানদাররা।
প্রসঙ্গত মুন্সিগঞ্জ বাজারের ¯øুইস গেটের পাশে নির্মিত চারটি অবৈধ স্থাপনা সম্পর্কে প্রথম থেকেই অবগত ছিলেন ভ‚মি কর্মকর্তা আমিনুল হক। অবৈধ স্থাপনা নির্মাতা শাহজাহানের সাথে ভ‚মি কর্মকর্তার আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে বলে জানান অনেকে। সরকারি দায়িত্ব অবহেলা করে আত্মীয় তাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বলে অনেকের দাবি। অন্যদিকে বুড়িগোয়ালিনী ভ‚মি অফিসের অধীনে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হওয়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আদলে চরম নাটকীয়তা চলছে।
এরপরে অদৃশ্য কারণে কাজগুলো আবার শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে যখন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সহ সুধীমহল কর্তৃপক্ষকে জানান তখন সাময়িকভাবে কাজটি বন্ধ থাকে। আবার পুনরায় কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু করে। এভাবে নাটকের মধ্য দিয়ে এক সময় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ শেষ হয়। প্রসঙ্গত মুন্সিগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের সীমানা প্রান্তে সরকারি জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে ২টি অবৈধ স্থাপনা ।
দুই ইউনিয়নের সীমানায় অবৈধভাবে নির্মাণাধীন জায়গাটা নিয়ে প্রথম থেকেই শুরু হয় চরম নাটকীয়তা। বুড়িগোয়ালিনী ও মুন্সিগঞ্জ ভ‚মি অফিসের কর্মকর্তাগণ সীমানা জটিলতায় নিয়ে প্রাথমিকভাবে দায় নিতে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার(ভ‚মির) হস্তক্ষেপে প্রাথমিকভাবে কাজ বন্ধ দেন মুন্সিগঞ্জ ভ‚মি অফিসের কর্মকর্তা আইনুল হক।
পরবর্তীতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা কামাল হোসেন নির্মাণাধীন ঘরের আংশিক অংশ উচ্ছেদ করেন। কিন্তু গতকাল রবিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) নির্দেশে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা কামাল হোসেন আবার অভিযান পরিচালনা করেন। উচ্ছেদ অভিযানে শুধুমাত্র বারান্দার সিমেন্ট শীট গুলো খুলে দেওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে কাজ না করার জন্য নির্দেশ দিয়ে যায়। এভাবে কয়েকটা অবৈধ স্থাপনার কাজ সমাপ্ত প্রায়। যথা নিয়মে অদৃশ্য শক্তি বলে সম্প‚র্ণ হওয়ার অপেক্ষায় অবৈধ স্থাপনা।
স্থানীয়দের প্রশ্ন যদি অবৈধ স্থাপনা হয় তাহলে খন্ডাংশ ভাঙ্গা হচ্ছে আবার গড়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে কেন? অভিযান পরিচালনার নামে ভাঙ্গার নাটক করে বিষয়টা শিথিল করার চেষ্টা মাত্র। এটা নিয়ে সুধী মহলের গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
আংশিক ভাঙ্গার বিষয়ে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা কামাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা শুধু উপরের সিমেন্ট শীট খোলা হয়েছে বাদবাকি কাজ অক্ষত অবস্থায় আছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, আমি স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার জন্য ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, আমি সম্প‚র্ণ বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখব।