
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ভূমিদস্যু সিদ্দিক ইউড্রেন নির্মাণ করে সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যের জমির উপর দিয়ে পানি সরাতে না দেওয়ায় খুন জখমের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের মৃত কেদার নাথ মন্ডলের পুত্র হিমাংশু কুমার মন্ডল এ অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, শ্রীফলতা মৌজায়, জেল এল নং- ৩৪, খতিয়ান নং- ১১৩, ডিপি খতিয়ান নং- ১০৫, সাবেক দাগ নং- ৩৫,৩৯,৩৪, হাল দাগ নং- ৭৫,৯৯,৮৪, আমার.৪৪ শতক জমি রয়েছে। উক্ত জমিটি বিলের অন্যান্য জমির তুলনায় উচু হওয়ায় জমিটি বীজতলা হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছি। ওই বীজ নিয়ে পরবর্তীতে অন্যান্য জমিতে চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু উক্ত সম্পত্তির উপর কুনজর পড়ে একই এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু দালাল প্রকৃতির মৃত. হানিফ মহাজনের পুত্র মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের। সে কৌশলে উক্ত সম্পত্তি দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কিন্তু দখল করতে না পেরে উক্ত সম্পত্তিটি মূল্যহীন করার উদ্দেশ্যে তার বসতবাড়ির পানি নিস্কাশনের জন্য জোরপূর্বক সরকারি রাস্তা কেটে ইউড্রেন নির্মানের ষড়যন্ত্র শুরু করে। সেখানে উক্ত ইউড্রেনটি হলে আমার বীজতলার জমিটি বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে তলিয়ে থাকবে। ফলে আমার বীজতলা নষ্ট হবে। চাষাবাদের ক্ষেত্রে আমি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হবো। এবিষয়ে প্রতিকার পেতে গত ০৭/০২/২০১৯ তারিখে আমার স্ত্রী সুজিতা রাণী মন্ডল বাদী হয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় সেখানে ইউড্রেনটি নির্মাণ না করার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ইউড্রেন নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
আমার সম্পত্তির পাশে থাকা সড়কটি পাকাকরণের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। কিন্তু ওই ভূমিদস্যু সিদ্দিকের কু পরামর্শে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আমার সম্পত্তির সামনের কিছু স্থান ফাঁকা রেখেছেন। সেখানে নাকি জোরপূর্বক ইউড্রেন নির্মাণ করবেন। ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে আমি উক্ত সম্পত্তিতে গেলে সিদ্দিকুর ও তার বাহিনী আমাকে মারপিট করতে উদ্যাত হয়। তখন আমি উপায়ন্তর হয়ে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে উক্ত স্থানে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।
উক্ত নির্দেশ পাওয়ার পর উল্লেখিত সিদ্দিকুর রহমান আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। সিদ্দিকুর রহমান প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করে বলছেন,‘ তোকে জমি থেকে উচ্ছেদ করে ভারতে তাড়িয়ে দেবো, তোর কোন বাপ আছে আমি দেখবো, প্রয়োজনে খুন করে হলেও সেখানে ইউড্রেন করা হবে’ মর্মে হুমকি দিচ্ছেন। অথচ উক্ত স্থানে ইউড্রেনটির কোন প্রয়োজন নেই। ড্রেনটি না হলেও এলাকার মানুষের কোন ক্ষতি হবে না। শুধু মাত্র নিজের ক্ষমতা জাহির করতে এবং নিজের ব্যক্তিস্বার্থে সিদ্দিকুর সেখানে জোরপূর্বক ড্রেন নির্মানের চেষ্টা করছেন। এতে সরকারি অর্থ তছরুপ করা হবে মাত্র। এতে কারো উপকার না হলেও আমি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবো। উক্ত সিদ্দিকুর এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু। তার একটি ভাড়াটিয়া বাহিনী রয়েছে। উক্ত বাহিনীর সহযোগিতায় এলাকার আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। এছাড়া বিভিন্ন কৌশলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আমি সংখ্যালঘু পরিবারের হওয়ায় বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। তার বাহিনী দিয়ে যে কোন সময় আমার মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে বলে আশংকা করছি। আমি ওই ভূমিদস্যু সিদ্দিকুর বাহিনীর হাত থেকে বীজ তলার সম্পত্তি রক্ষা এবং জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।