
ওমর ফারুক মুকুল: দৈনিক সাতনদীসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় শাঁখরা কোমরপুর এ.জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি এখন দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এদিকে শুক্রবার সকালে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবল অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে বলে সংবাদ পেয়ে কয়েকজন সাংবাদিক স্কুল এলাকায় উপস্থিত হলে, সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে গোপন মিটিং শেষ করেন। এসময় মিটিং এ অংশগ্রহনকারী কয়েজজন শিক্ষক ও শিক্ষিকা প্রত্যেকে একটি করে খাতা নিয়ে (রেজুলেশন খাতার মত) দ্রুতবেগে স্কুল ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য যে, সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের শাঁখরা কোমরপুর এ.জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবলের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের উপবৃত্তির ফরম পূরণ বাবদ জন প্রতি ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে তিন শতাধিক টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৫ই মে বুধবার বেলা ১২টায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে সহকারী শিক্ষক আছাদ ও শিক্ষিকা ফারহানা সহ অনান্য শিক্ষকরা উপবৃত্তির ফরম ফরম পূরন বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন শত টাকা করে নিচ্ছে। টাকা নেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে জানতে চাইলে শাখরা গ্রামের সপ্তম শ্রেনী পড়ুয়া এক ছাত্রীর পিতা সাইফুল ইসলাম, একই শ্রেনীতে পড়ুয়া ছাত্রের পিতা আসাদুল ইসলাম, শাঁখরা বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক অভিভাবক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনশত টাকা নেওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। প্রায় ৩৫০ ছাত্রছাত্রীর প্রত্যেকের কাছ থেকে এ টাকা নেওয়া হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক মাথাপিছু ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে একশত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলো। জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন জানতে চাইলে বলেন, উপবৃত্তির ফরম বাবদ কোন প্রকার টাকা নেওয়া যাবে না।
এদিকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সমাজের চোখে তার মুখোশ উম্মচিত হওয়ায় বেজায় খেঁপেছেন তিনি। নিজেকে দুধে ধোয়া তুলশী পাতা বানাতে বিভিন্ন স্থানে ধর্না দিয়ে ছুটা ছুটি করছেন। তার অপকর্ম ঢাকতে দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। তার কর্মকান্ড বর্তমানে শিক্ষা ব্যবসায়ীতে রুপ নিয়েছে।
শাঁখরা বাজারের জারিউল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জানান, এই প্রধান শিক্ষক একজন দুর্নীতিবাজ, তিনি বিদ্যালয়ের কোমলমতী ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য সব সময় চাপ দেয়। কিছু দিন আগে উপবৃত্তির জন্য ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে যায় প্রত্যয়ন পত্র নিতে প্রধান শিক্ষক প্রতিটি প্রত্যয়নের জন্য ৫০-১০০টাকা করে নিয়েছিলো। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাঁখরা বাজারের আরেক ব্যবসায়ী জানান, শাঁখরা কোমরপুর এ.জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অত্র বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রকম অনিয়ম ও দুর্ণীতি চলমান আছে। আমরা তার কঠিন বিচার চাই।
এলাকাবাসী ও সাধারন মানুষ শাঁখরা কোমরপুর এ.জি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমেদ শরীফ ইকবলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সকল বিষয়ের সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।