
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাবার ৩ শতক জমি ছাড়া সম্পদ বলতে কিছুই ছিলোনা। দিন-মুজুরে কাজ করে সংসার চলতো। অর্থের অভাবে মাধ্যমিক শেষ করতে হিমশিম খাওয়া ব্যাক্তিটি হটাৎ যেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বাড়ি গাড়ি থেকে শরু করে কোটি টাকার আমবাগানের মালিক। কোথা থেকে আসলো এই অর্থ সম্পদ জানতে চাই এলাকাবাসি।
দিনমজুর থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া আবুল খায়ের সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার ৪ নং লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দিনমজুর আব্দুস সাত্তার মোড়লের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে। তিনি কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে নকল-নবিশে কর্মরত থাকলেও তিনি এলাকার মানুষের কাছে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে পরিচিত জাহির করেন। শুধু তাই নয়, তিনি নকল-নবিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় দয়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কথিত ক্যাশিয়ার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়,আবুল খায়ের ১৯৯৯ সালে কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্র অফিসে ওমেদার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৪ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এস এস সি পাশ করেন। এরপর তৎকালিন সাব-রেজিষ্ট্রার স ম সাইদুর রহমান এর হাত ধরে ২০০৫ সালে “নো ওয়ার্ক নো পে” নকল-নবিশে যোগদান করেন। তারপর থেকে সুচতুর আবুল খায়েরের পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি কোনদিন। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সকল কর্মরত কর্মকর্তাদের ব্যাক্তিগত ঘুষের টাকা ও অফিস কালেকশনের টাকাও এককভাবে সংগ্রহ করে থাকেন এই আবুল খায়ের।
২০১৭ সালে সাব-রেজিষ্ট্রার হিসেবে সাহিদুর রহমানের যোগদানের পর ঘুষের টাকা কালেকশনের দায়িত্বে থাকা আবুল খায়ের আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন এবং পর্যায়ক্রমে অফিসের সরকারি কর্মচারি এমনকি অফিসারকেও জিম্মি করে থাকেন।
নির্ভরযোগ্য স‚ত্রে জানা গেছে, আবুল খায়েরের সাপ্তাহিক অফিস থেকে আড়াই লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন। আর এই অবৈধ উর্পাজন থেকে সল্পসময়ে মধ্যে তিনি গড়ে তুলেছেন আলিসান বাড়ি, গাড়ি। সম্প্রতি অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে লাঙ্গলঝাড়া এলাকার ফারুক হাজরার কাছ থেকে ২০ শতক জমি ক্রয় করেছেন এই দিনমজুরের ছেলে আবুল খায়ের। সেখানে তিনি গড়ে তুলেছেন বাগান বাড়ি ও আমবাগান। এছাড়াও আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে নিয়োমিত মাদক সেবনেরও অভিযোগ আছে।
অত্র এলাকার তাহের ও সিরাজসহ অনেকে জানান,কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের অবৈধ অর্থ উত্তোলনের দায়িত্ব পালনকালে আবুল খায়ের গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকা সম্পদের মালিক হয়েছেন।তিনি বর্তমানে এলাকার কাউকে তোয়াক্কা করে না। তিনি নিজেকে এলাকায় খায়ের সাহেব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে, গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে আছেন স্থানিয় একজন জনপ্রতিনিধি। খায়ের এখন এলাকাবাসির কাছে আতঙ্কের নাম।
এদিকে আবুল খায়েরের সাথে সম্পৃক্ত কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের দ‚র্ণিতীবাজ কর্মকর্তা কর্মচারিসহ তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।পর্যায়ক্রমে পাঠকের সামনে তুলে ধরা হবে।
এব্যাপারে কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের নকলনবিশ ও ঘুষের টাকা কালেকশানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা আবুল খায়ের স্বীকারোক্তী দিয়ে জানান, বিগত কয়েক বছর স্যার আমার দায়িত্ব দিয়ে ছিলেন তাই দায়িত্ব পালন করেছি। আগে এই টাকা আমি কালেকশন করতাম এখন আর আমি দায়িত্বে নেই।এখন দায়িত্বে আছেন প্রধান সহকারি আব্দুল জব্বার।
আব্দুল জব্বারের কাছে জানতে চাইলে,আমি এব্যাপারে কিছুই জানিনা বলে তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন।
এদিকে সামান্য নকল-নবিশ হয়ে, হটাৎ অঢেল সম্পাদের মালিক বনে যাওয়া আবুল খায়েরের বিষয়টি দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
কলারোয়া সাব-রেজিষ্ট্রার মনজুরুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। আমি খোজ খবর নিবো।