
আইয়ুব হোসেন রানা: আগামি ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। তদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মনোনীত হয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামীলীগ নেতা মাষ্টার মোঃ মনিরুজ্জামান (বুলবুল) ও বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী শেখ শরিফুজ্জামান (তুহিন) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নারিকেল গাছ প্রতিকে লড়ছেন সাবেক মেয়র মোঃ আক্তারুল ইসলাম, জগ প্রতিক নিয়ে লড়ছেন আক্তারুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস সুলতানা ও মোবাইল ফোন প্রতিক নিয়ে লড়ছেন সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু। এ ৫ প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীকে এক মঞ্চে নিয়ে জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠান করলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সোমবার সকাল ১০টায় কলারোয়া পাবলিক ইনস্টিটিউট মুক্ত মঞ্চে সুজন কলারোয়া উপজেলা কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৫ মেয়র প্রার্থী উপস্থিত হয়ে আগামি নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে কলারোয়া পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলবেন এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মনিরুজ্জামান (বুলবুল) বলেন, আওয়ামীলীগ সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কলারোয়া পৌর বাসির ভাগ্য উন্নয়ন করার জন্য আমাকে নৌকার প্রার্থী করেছেন। তিনি বলেন আমি বিগত ২ বছর কলারোয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। এ দুই বছরে আমি পৌরসভার উন্নয়নে প্রায় ১৮ কোটি টাকার কাজ করেছি । তার সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে উল্লেখ করে মনিরুজ্জামান আরো বলেন আমি ৩০ জানুয়ারি নির্বাচিত হতে পারলে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, স্কুল কলেজের উন্নয়ন সহ খেলাধুলার জন্য স্টেডিয়াম তৈরি করবো। সর্বোপরি কলারোয়াকে একটি মডেল পৌরসভা হিসাবে গড়ে তুলবো।
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী শেখ শরিফুজ্জামান (তুহিন) বলেন, ১৯৯০ সালে কলারোয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘ ৩০ বছরে কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। পৌরসভায় রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ সহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন আমি মেয়র নির্বাচিত হতে পারলে পৌরসভাকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করবো। নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন যাতে ঘটে তার জন্য নির্বাচনের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানোর জন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতিকের নার্গিস সুলতানা বলেন, আমি নির্বাচিত হতে পারলে আমার স্বামী সাবেক মেয়র আক্তারুল ইসলামের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি মাদক নির্মুল করবো, নারীসমাজ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সুখ দুঃখে পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করবো। তিনি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
মোবাইল ফোন প্রতিকের সাজেদুর রহমান খাঁন চৌধুরী মজনু বলেন,আমি নির্বাচিত হতে পারলে সকলকে সাথে নিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করবো। তিনি পৌরবাসির পাশে ছিলেন ,আছেন ও থাকবেন জানিয়ে নির্বাচিত হতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পৌরসভা পরিচালনার কথা উল্লেখ করে বলেন, পৌরবাসি যাকে কাঙ্খিত সেবা পেতে পারে তার ব্যবস্থা করবো।
নারিকেল গাছ প্রতিকের প্রার্থী সাবেক মেয়র মোঃ আক্তারুল ইসলাম বলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে কলারোয়া পৌরবাসি আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন। সেসময় তিনি পৌরসভার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন উল্লেখ করে বলেন ২য় বার ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করে জয়ী হলেও রাজনৈতিক কারণে আমি আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করতে পারি নাই। এবার নির্বাচিত হতে পারলে অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি পৌরবাসির কাঙ্খিত সেবার অঙ্গীকার করেন।
তবে একই দিন বিকালে নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে নারিকেল গাছ প্রতিকের প্রার্থী সাবেক মেয়র মোঃ আক্তারুল ইসলাম নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে তার স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ প্রতিকের নার্গিস সুলতানার জন্য দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করেন।
সুজন কলারোয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি প্রফেসর আবু নসর এর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক দীপক শেঠ ও শেখ শাহাজান আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সুজনের বিভাগীয় সমম্বয়কারী মাসুদুর রহমান রনজু, কলারোয়া থানার ওসি মীর খায়রুল কবির, সুজন জেলা সম্পাদক প্রভাষক শেখ হেদায়েতুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. এবিএম সেলিম, পাবলিক ইনস্টিটিউটের সভাপতি শেখ শহিদুল ইসলাম,সহ সভাপতি প্রফেসর আবু বকর সিদ্দিক, সম্পাদক এড. শেখ কামাল রেজা, সাংবাদিক সুকুমার দাস বাচ্চু, সাকিবুর রহমান বাবলা, আবু ছালেক, আবু সাইদ, রিপজা হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কলারোয়ায় কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক, উপজেলা সুজন সদস্য সহ পৌরসভার ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন।