
নিজস্ব প্রতিবেদক:
শ্যামনগর উপজেলার উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞার দুর্নীতি ও অপকর্মের ধারাবহিক প্রতিবেদন ছাপা হলেও অদৃশ্য কারণে রফিজ মিঞার বিরুদ্ধে কোন প্রতিকার হয়নি আজও। রফিজ মিঞার খুঁটির জোর কোথায়? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারসহ সর্ব মহলে।
পঞ্চমবারের মতো বিভিন্ন অপকর্মেও দায়ে শাস্তিমূলক বদলীতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এসেছেন তিনি বাংলাদেশের অপর প্রান্ত হবিগঞ্জ থেকে। সাংবাদিকদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কমপক্ষে ৬ জন নারী শিক্ষকের সাথে শীলতাহানীর ঘটনা ঘটার খবর। ঐ ৬জন নারীর শ্লীলতাহানীর অডিও এবং ভিডিও বার্তা যখন সংবাদকর্মীদের হাতে, ২৫টির বেশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির শিক্ষা কর্মকর্তা রফিজ মিয়ার ঘুষ বাণিজ্যের অডিও-ভিডিও বার্তা সংবাদকর্মীদের হাতে, তখনও তিনি সদম্ভে বলতে থাকেন, আমার কোন অন্যায় হয়নি, আমি সকল অপরাধ মুক্ত। তিনি উপজেলার কতিপয় শীর্ষ শিক্ষক দালাল সাথে নিয়ে নির্বিঘ্নে অপরাধ করেই যাচ্ছেন। এ যেন দেখার কেউ নেই। একজন নারী শিক্ষকের নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে বিভাগীয় সকল দপ্তরে আবেদন করলেও শিক্ষা অফিসারের বর্তমান আচরণ দেখে মনে হয়েছে দপ্তরের সবাইকে তিনি কিনে নিয়েছেন। ঐ নারী শিক্ষক শ্যামনগর থানায় এজাহার দাখিল করলেও গত এক সপ্তাহে শ্যামনগর থানা মামলা রেকর্ড করেনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। শিক্ষা অফিসার এখন তার দালালদের মতামত নিয়ে ঐ নারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞার পরম স্নেহধন্য স্বঘোষিত শিক্ষক নেতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে তার বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় মামলার বিচার প্রার্থী। তার সকল অপকর্মকে মুছে ফেলতে রফিজ মিঞা উর্ধতনদের দরবারে বারবার কথা বলছেন। শিক্ষক দেলোয়ারও শিক্ষা অফিসারের সকল অপকর্ম ঢেকে দিতে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ১৬/০২/২০২৩ইং তারিখে ফৌজিয়া পারভীন নামের এক নারী (মুহাম্দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী,সহকারী শিক্ষকের স্ত্রী) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদনের পর বেরিয়ে এসেছে শিক্ষক দেলোয়ারের চিরচেনা রুপের আর একটি পর্ব বেরিয়ে আসে।
ইতোপূর্বে প্রায় ৪ শতাধিক অভিভাবকের স্বাক্ষরিত শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে আবেদনের তদন্তপর্ব শেষ করে বিচারাধীন। ফৌজিয়া পারভীন নামের ঐ নারীর আবেদনের বর্ননা থেকে জানা যায়, শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন উপজেলার ১৮৫ নং সোয়ালিয়া সাপেরদুনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পাইয়ে দিতে ৪(চার) লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। দেলোয়ারের চালাকি বুঝতে পেরে ইসমাইল টাকা ফেরতের কথা বলে। দেলোয়ার টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইসমাইল দুঃচিন্তা করতে থাকে। কয়েকদিনের মধ্যে ইসমাইলের মস্তিস্ক বিকৃতি ঘটে। বর্তমানে ইসমাইল ট্রাকজনিত কারণে বিছানায় পড়ে আছে। একজন টগবগে তরুণ, যে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করিয়ে শিক্ষার প্রসার ঘটাবে, সেই ইসমাইল এখন মৃত্যুপথযাত্রী।
অসুস্থ শিক্ষক ইসমাইলের স্ত্রী জানান, তিনি শিক্ষক দেলোয়ারের নিকট থেকে পাওনা টাকা ফেরত নিয়ে স্বামীকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ্য করতে চায়। তার স্বামীর অকালে মৃত্যু হলে দায়ভার দেলোয়ারের উপর বর্তাবে মর্মে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সে। আর তাই প্রথমে শিক্ষা বিভাগে আবেদন করেছে। রফিজ মিঞার এই উপজেলায় সার্বক্ষণিক সঙ্গ দেওয়া দেলোয়ারের চরিত্র যদি এমন হয়, শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞা ইসমাইলের বিষয়টির দায় এড়াবেন কিভাবে। শিক্ষক ইসমাইলের স্ত্রীর আবেদন উড়ে যাবে নাতো? এক সময়কার কপর্দকশূণ্য শিক্ষক শ্যামনগরেরর পৌর এলাকায় এক সাথে পাঁচ বিঘা জমির মালিক যার আর্থিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা। উপজেলার শিক্ষকগণ দেলোয়ারের অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়াতে দূদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।