
সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: আশাশুনির কৃষকরা আমনের দাম ভালোই পেয়েছে। সে কারণে আশাশুনির কৃষকরা উৎসাহ উদ্দীপনায় বোরো আবাদ শুরু করেছে। জমি প্রস্তুত করতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষরা।জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো, ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কৃষকরা। গত মৌসুমের আমন ধানের ভালো ফলন ভাল পেয়ে কৃষকদের বোরো আবাদে এবার আগ্রহ বেড়েছে।
এদিকে সকালের শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ বা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার বিতরণ কাজে ব্যস্ত। কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউ বা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন ক্ষেতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস চলতি ইরি বোর মৌসুমে ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ২০১৯-২০ মৌসুম অপেক্ষা ৩০ হেক্টর বেশী জমিতে ধানাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোরো হাইব্রিড ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০০ হেক্টর জমিতে। এবং উপশী জাতের ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৪৫০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে হাইব্রিড প্রতি হেক্টরে ৪.৮৫ মেঃটন হিসাবে ১২ হাজার ১২০ মেঃটন এবং উপশী প্রতি হেক্টরে ৪.১২ মেঃটন হিসাবে ১৮ হাজার ৫৪০ মেঃটন। সর্বমোট ৭০০০ হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা ৩০ হাজার ৬৬০ মেঃটন। গত ২০১৯-২০ মৌসুমে হাইব্রিড ২৬০৫ হেক্টর জমিতে ১২ হাজার ২৪৪ মেঃটন ও উপশী ৪৩৬৫ হেক্টর জমিতে ১৭ হাজার ২৪ মেঃটন ধান উৎপাদিত হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৩৯২ মেঃটন ধান বেশী উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নের চাষি সুকুমার বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে আমাদের। এবার আমন চাষে করে আমরা লাভবান হয়েছি। সেই আশায় পুরোদমে আবার বোরো আবাদ শুরু করে দিয়েছি।উপজেলার বুধহাটা গ্রামের নিলু দাস জানান, গত আমন মৌসুমে ধানের ফলন ও বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদ করতে তারা বেশি আগ্রহী।অন্যান্য বছর কোল্ড ইনজুরিতে পচন লেগে বীজ চারা নষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো চারাও বেশ ভালো হয়েছে।আশাশুনির শে^তপুর এলাকার বাসিন্দা গোলাম মস্তোফা জানান, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভবান হবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান বলেন, আবহাওয়া মৌসুমের শুরুতে কিছুটা বৈরী ছিল। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে এবং পোকা মাকড়ের আক্রমনসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে ইনশাল্লাহ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা এবং উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ নিয়মিত ভাবে মাঠে থেকে ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও কৃষকদের সহযোগিতা দিয়ে আসছে।