
সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনি থেকে: মহাষষ্ঠীর মধ্রে দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গাপূজা আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রতিটি পূজা মন্ডপকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মত এ বছরও আশাশুনিতে চলেছে নানা আয়োজন। করোনার কারনে এ বার স্বাস্থ্য বিধি মেনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবছর আশাশুনি উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ১০৫ টি পূজা মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রতি বছরের মত এবছরও দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাঙ্গালীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দূর্গাপূজা। বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিমা শিল্পিরা চলে আসেন আশাশুনির এসব মন্ডপে। দেবী দুর্গা, তার সাথে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী ল²ী এবং তার সাথে দেবতা কার্তিক, গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুঁটিয়ে তুলেছেন নিপুন হাতের ছোঁয়ায়। শারদীয়া এ দূর্গাৎসব শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নয় অন্যান্য ধর্মবলম্বীদের মধ্যেও সৃষ্টি করবে দৃঢ় স¤িপ্রতির বন্ধন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
উপজেলা প্রসাশন থেকে জানা গেছে এ বছর উপজেলায় ১০৫ টি মন্দিরে পূজা অনষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে শোভনালী ইউনিয়নে ৬, বুধহাটা ইউনিয়নে ৫, বড়দল ইউনিয়নে ২০, শ্রীউলা ইউনিয়নে ৮, আনুলিয়ায় ৫, খাজরায় ১৩, কুল্যায়১২, দরগাপুর ৯, প্রতাপনগর ২ টি, কাদাকাটি ১৬ টি মন্দিরে পূজা অনষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রতিমা শিল্পী অরবিন্দু সরকার জানান, এবছর এক-একজন ভাস্কর ৫ থেকে ৬টা প্রতিমা তৈরী করেছেন। পূজা শুরুর কয়েকদিন আগের শেষ হয়ে থাকে প্রতিমা তৈরী ও রং এর কাজ। তবে করোনার কারনে বিগত বছরের তুলনায় মুজরী অনেক কম। দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির এই বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরী করে যে মজুরি পান শিল্পীরা তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টের হয়ে পড়েছে তাদের। ফলে পুর্বপুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই।
বুধহাটা সূবর্ণ বনিক পাড়ার পূজা কমিটির সভাপতি দেবকুমার দে বলেন, প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ। এখন চলছে প্যান্ডেল ও লাইটিং এর কাজ। তবে এবছর প্রতিমা তৈরীর আনুসঙ্গিক জিনিস পত্রের দাম বাড়ার কারণে তাদের এবার খরচের পরিমান বেশি। স্বাস্থ্য বিধি মেনে আমরা পূজা করার চেষ্টা করবো। তিল তিল ভাবে প্রতিটি মন্দির মুখরিত করতে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আয়োজকরা। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আশাশুনি উপজেলা শাখার সভাপতি নীলকন্ঠ সোম জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ডপে যাতে লোক সমাগম কম থাকে সে ব্যাপারে মন্দির কমিটির সাথে আলোচনা হয়েছে। করোনা, দ্রব্য মূল্য উধগতির কারনে গ্রামাঞ্চলে পূজা মন্ডপ তৈরী করেত অনেক কষ্ট হচ্ছে আয়োজকদের। এছাড়া সরকারী সাহায্য-সহাযোগীতা প্রয়োজনের তুলানায় অনেক কম। তরপরেও কষ্টের মধ্যে থেকে দূর্গাপূজা যতটা আননন্দের মধ্যে করা যায় আয়োজককেরা সে চেষ্টা করেছেন।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবীর জানান, সার্বজনীন পূজা মন্ডপ গুলোতে পূর্বের মত নিরাপত্তা থাকবে। দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে আশাশুনি উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রন রাখা এবং হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকজন শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে পালন করতে পারে সেজন্য মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। এর পাশাপাশি যদি মনে করি নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে হবে সেটা আমরা করবো।